Header Ads

Header ADS

জুমার খুতবা-৫ ঈদুল আযহা : ভাগা কুরবানী



মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাসুম


কুরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবানগণ এটি আদায় করা ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই ইবাদত পালন করে না তার ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে, ‘যার কুরবানীর সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কুরবানী করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’-মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৩৫১৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫
ইবাদতের মূলকথা হল আল্লাহ তাআলার আনুগত্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন। তাই যেকোনো ইবাদতের পূর্ণতার জন্য দুটি বিষয় জরুরি। ইখলাস তথা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পালন করা এবং শরীয়তের নির্দেশনা মোতাবেক মাসায়েল অনুযায়ী সম্পাদন করা। এ উদ্দেশ্যে এখানে কুরবানীর কিছু জরুরি মাসায়েল উল্লেখ হল।
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে কুরবানী করেছেন। যেমন-
(১) আয়েশা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি শিংওয়ালা সুন্দর সাদা-কালো দুম্বা আনতে বললেন… অতঃপর দো‘আ পড়লেন
بِسْمِ اللهِ اَللَّهُمَّ تَقَبَّلْ مِنْ مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَمِنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ-
উচ্চারণ : বিসমিল্লা-হি আল্লা-হুম্মা তাক্বাববাল মিন মুহাম্মাদিন ওয়া আলি মুহাম্মাদিন ওয়া মিন উম্মাতি মুহাম্মাদিন।
অর্থঃ ‘আল্লাহ্র নামে, হে আল্লাহ। আপনি কবুল করুন মুহাম্মাদের পক্ষ হ’তে, তার পরিবারের পক্ষ হ’তে ও তাঁর উম্মতের পক্ষ হ’তে’। এরপর উক্ত দুম্বা কুরবানী করলেন (ছহীহ মুসলিম, ছহীহ তিরমিযী হা/১২১০, ছহীহ আবুদাঊদ হা/২৪২৩; ছহীহ ইবনু মাজাহ হা/৩১২৮; মিশকাত, পৃঃ ১২৭, ২৮, হা/১৪৫৪ ‘কুরবানী’ অনুচ্ছেদ)।

(২) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিদায় হজ্জে আরাফার দিনে সমবেত জনমন্ডলীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হে জনমন্ডলী! নিশ্চয়ই প্রতিটি পরিবারের উপরে প্রতি বছর একটি করে কুরবানী’ (সনদ ছহীহ, ছহীহ তিরমিযী হা/১২২৫; ছহীহ আবুদাঊদ হা/২৪২১; ছহীহ নাসাঈ হা/৩৯৪০; ছহীহ ইবনে মাজাহ হা/২৫৩৩; মিশকাত হা/১৪৭৮)।

(৩) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পরেও তাঁর সুন্নাত অনুযায়ী ছাহাবীগণের মধ্যে প্রত্যেক পরিবারের পক্ষ থেকে একটা করে কুরবানী করার প্রচলন ছিল। যেমন আতা ইবনু ইয়াসির ছাহাবী আবু আইয়ূব আনছারী (রাঃ)-কে রাসূলের যুগে কেমনভাবে কুরবানী করা হ’ত মর্মে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘একজন লোক একটি বকরী দ্বারা নিজের ও নিজের পরিবারের পক্ষ হ’তে কুরবানী দিত। অতঃপর তা নিজে খেত ও অন্যকে খাওয়াত (ছহীহ তিরমিযী হা/১২১৬ ‘কুরবানী’ অধ্যায়; ছহীহ ইবনু মাজাহ হা/২৫৩৩ ‘নিজ পরিবারের পক্ষ হতে একটা বকরী কুরবানী করা’ অনুচ্ছেদ, ‘কুরবানী’ অধ্যায়)।

(৪) প্রখ্যাত ছাহাবী আবু সারীহা (রাঃ) বলেন, ‘একটি পরিবারের পক্ষ থেকে একটা অথবা দু’টা করে বকরী কুরবানী করা হ’ত (ছহীহ ইবনু মাজাহ হা/২৫৪৭)।  ইমাম শাওকানী (রহঃ) উপরোক্ত পরপর তিনটি হাদীছ পেশ করে বলেন, হক কথা হ’ল, একটি পরিবারের পক্ষ হ’তে একটি ছাগলই যথেষ্ট, যদিও সেই পরিবারের সদস্য সংখ্যা শতাধিক হয়’ (নায়লুল আওত্বার ৬/১২১ পৃঃ, ‘একটি পরিবারের পক্ষ থেকে একটি ছাগল কুরবানী করাই যথেষ্ট’ অনুচ্ছেদ)।

 পবিত্র ঈদুল আযহায় একটি পরিবারের পক্ষ থেকে একটি পশু কুরবানী করাই যথেষ্ট। তবে সামর্থ্য থাকলে একাধিক পশুও কুরবানী করতে পারবে।  তবে একা পশু ক্রয় করতে অক্ষম হয় একটি পশুতে একে অপরে শরীক হয়ে সাত ভাগে কুরবানী করা যায়। যেমন-

(ক) আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে এক সফরে ছিলাম। এমতাবস্থায় কুরবানীর ঈদ উপস্থিত হ’ল। তখন আমরা সাত জন একটি গরুতে ও দশ জন একটি উটে শরীক হ’লাম (ছহীহ তিরমিযী হা/১২১৪; ছহীহ ইবনে মাজাহ হা/৩১২৮, ছহীহ নাসাঈ হা/৪০৯০; সনদ ছহীহ, আলবানী, মিশকাত হা/১৪৬৯, ‘কুরবানী’ অনুচ্ছেদ)।

(খ) জাবির (রাঃ) বলেন, হুদায়বিয়ার সফরে আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে ছিলাম। তখন একটি গরুতে সাত জন ও একটি উটে সাত শরীক হয়ে কুরবানী করেছিলাম (ছহীহ মুসলিম হা/১৩১৮ ‘হজ্জ’ অধ্যায়; ছহীহ আবুদাঊদ হা/২৪৩৫; ছহীহ তিরমিযী হা/১২১৪; ছহীহ ইবনু মাজাহ হা/৩১৩২)।

(গ) জাবির (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে হজ্জের সফরে ছিলাম। তখন সাত জনের পক্ষ থেকে একটি উট এবং সাত জনের পক্ষ থেকে একটি গরু কুরবানী করেছিলাম (ছহীহ মুসলিম ২/৯৫৫ পৃঃ)।

কোন মন্তব্য নেই

ওসমান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর মর্যাদা

জন্ম পরিচিতি: হজরত ওসমান গণী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন তৃতীয় খলীফা, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার জামাতা, পয়ত্রিশ মতান্তরে ছত্রি...

Blogger দ্বারা পরিচালিত.