উপমহাদেশের মুসলমানগণ যাঁর কাছে ঋণী
যুগে যুগে মহান আল্লাহ তায়ালার মনোনীত মহামানব নবীগণ আলাইহিমুস সালাম, সাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম এবং বুযুর্গানে দ্বীন রহমাতুল্লাহি আলাইহিম আপন আপন মর্যাদা অনুযায়ী আল্লাহ্ তায়ালার রাস্তায় ধন—সম্পদ, জীবন, পরিবার—পরিজন প্রভৃতি উৎসর্গ করেছেন এবং এই ধারাবাহিকতা আজও অব্যহত রয়েছে। বুযুর্গানে দ্বীন আল্লাহ্ তায়ালার পথে কখনো সম্পদ কোরবান দিয়েছেন, কখনো জীবন উৎসর্গ করেছেন, কখনো রাজত্ব কোরবান করেছেন, কখনো মন্ত্রীত্ব কোরবান দিয়েছেন। মোটকথা যখন যেখানে যা উৎসর্গ করার প্রয়োজন হয়েছে তারা সেই জিনিসটিই আল্লাহ্ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে কোরবানী করেছেন। তার এক উজ্জল দৃষ্টান্ত হলেন সুলতানুল হিন্দ হযরত খাজা মঈনুদ্দীন হাসান চিশতী আজমিরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি। তিনি ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারে কিংবদন্তি ঐতিহাসিক সুফি ব্যক্তিত্ব। বক্ষমান নিবন্ধে তাঁর রুহানী ফুয়ুজাত অর্জনের উদ্দেশ্যে তাঁর বর্নাঢ্য জীবনের কিয়দাংশ আলোকপাত করার প্রয়াস পেলাম।
জন্ম ও বংশ পরিচিতি: হযরত মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ৫৩০ মতান্তরে ৫৩৭ হিজরির ১৪ রজব সোমবার পারস্যের সিজিস্তান প্রদেশের সানজার নামক শহরে এক শুভক্ষণে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা খাজা গিয়াসুদ্দীন হাসান ছিলেন একজন ধনবান ও প্রভাবশালী বণিক। মাতা ছিলেন মহান তাপসী মাহে নূর। তাঁর দ্বাদশতম পুরুষের মাধ্যমে মাতা—পিতা উভয়দিক হতে হযরত মাওলা আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর সাথে সম্পর্কিত। ফলে তিনি পিতা ও মাতা উভয় দিক দিয়েই ছিলেন সৈয়্যদজাদা। (তায্কেরাতুল আওলিয়া, এমদাদিয়া লাইব্রেরি ,খ—৪,পৃ.২৭১; মঈনুল হিন্দ হযরত খাজা মঈনুদ্দীন আজমেরী, পৃ.২০ ;ইকতিবাসিল আনওয়ার, পৃ.৩৪৫)
বাল্য জীবন: খাজা আজমিরী রহমাতুল্লাহি আলাইহির বয়স যখন সাত বৎসরে উপনিত হয়েছে, তখন হতেই তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামায নিয়মিত আদায় করতেন। শুধু নামায আদায় করে ক্ষ্যান্ত হননি। ছোট্ট বয়সে তিনি নিয়মিত রোযা রাখতেন ও যিকিরে—আযকারের মজলিসে যোগ দিতেন। তিনি কোমল হৃদয়, নম্র স্বভাবের এবং ক্ষমা ও মার্জনাকারী ছিলেন। একবার ঈদের সময় উত্তম পোশাক পড়ে ঈদের নামাযের জন্য যাচ্ছিলেন, পথে একজন অন্ধ শিশু তাঁর দৃষ্টি আকর্ষন করলো, যে ছিলো ফাঁটা পুরোনো কাপড় পরিহিত। তিনি তাকে দেখে দুঃখিত হলেন এবং তাঁর কাপড় খুলে সেই গরীব ও অন্ধ শিশুটিকে দিয়ে দিলেন আর নিজে অন্য কাপড় পড়ে তাকে নিজের সাথে ঈদগাহে নিয়ে গেলেন। (মঈনুল হিন্দ হযরত খাজা মঈনুদ্দীন আজমেরী, পৃ.২২)
আধ্যাত্মিক পরিবর্তন: হাসান চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহির বয়স যখন ১৫ বছর তখনই পিতা—মাতা উভয়ই ইন্তেকাল করেন। পিতৃ—মাতৃহারা এ শিশুর কোন পরামাত্মীয় ছিল না, সম্পদ বলতে ছিল পিতার উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া একটি যাঁতি ও আঙ্গুর ফলের বাগান। একদিন তিনি ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত ফলের বাগানে কাজ করছিলেন; এমন সময় উক্ত বাগানে তাশরীফ আনলেন মজ্জুব অলি হযরত ইব্রাহীম কান্দুজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি। তিনি প্রবেশ করেই বাগানের একপাশে বসে ধ্যানমগ্ন হয়ে গেলেন। গরীব নাওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিষয়টি দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করে হযরত ইবরাহীম কান্দুজী রহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে গিয়ে তাঁর খিদমতে কিছু আঙ্গুর ফল পেশ করলেন। ফল খাওয়া শেষ হলে হযরত ইব্রাহীম কান্দুজী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বরকতময় থলে থেকে কিছু খাদ্য (গমের রুটি) বের করে কিছু অংশ নিজ দাঁতে চিবিয়ে খেয়ে বাকিটা তাঁকে খেতে দিলেন। হযরত মুঈনুদ্দীন চিশতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত রুটির অংশটি আদব সহকারে খেয়ে নিলেন। খাওয়ার পর পর তাঁর মধ্যে ভাবান্তর (হাল) সৃষ্টি হয়ে যায়। ক্রমান্বয়ে জগৎ সংসার বিমূখ হয়ে নিজের পিতৃসম্পদ যাঁতি ও ফলের বাগান বিক্রি করে দিয়ে ইলমে শরীয়ত, তরিক্বত, হাক্বিকত ও মারিফাত হাসিলের জন্য সফরে বের হয়ে পড়েন। প্রথমে বুখারা গিয়ে সাড়ে সাত বছর কুরআন, তাফসির, হাদীস, ফিক্বহসহ জ্ঞানের নানান বিষয়ে ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। অতঃপর ইলমে তাসাউফের গভীর নির্যাস অর্জনের লক্ষ্যে শায়খ তথা পীর—মুর্শিদ তালাশ করতে লাগলেন এবং তৎকালীন সময়ের শ্রেষ্ঠ বুযূর্গ হযরত উছমান হারওয়ানি রহমাতুল্লাহি আলাইহির দস্ত মুবারকে বাইয়াত গ্রহণ করে প্রায় একুশ বছর কঠোর রিয়াযত—মুরাকাবা ও মুশাহাদার মাধ্যমে ইলমে তাসাউফে পূর্ণতা হাসিল করেন। অতঃপর তিনি তাঁকে খিলাফত বা সুফি প্রতিনিধিত্ব প্রদান করেন।(সিয়রিল আকতাব, পৃ.১৪২)
হজ্জে বায়তুল্লাহ: হযরত উছমান হারওয়ানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি একদিন তাঁকে বললেন, “হে মুঈনুদ্দীন! চল, তোমাকে আল্লাহ তাআলা ও তাঁর হাবীব রাসূলে আরবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার নিকট সোপর্দ করে দিবো।” অতঃপর একথা বলে তিনি তাঁকে সাথে নিয়ে হজ্জে বায়তুল্লাহ ও যিয়ারতে মদীনা মুনাওয়ারার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। তাঁরা দামেস্ক ও হেযায হয়ে মক্কা মুয়াজ্জমায় পৌঁছেন। হজ্ব সম্পন্ন করার পর হযরত উছমান হারওয়াম্ননী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন,“হে আল্লাহ তায়ালা! মুঈনুদ্দীনকে আপনার নিকট সোপর্দ করে দিলাম, আপনি তাঁকে কবুল করুন।” সাথে সাথে ইলহাম হলো (মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অদৃশ্য আওয়াজ)— “হে উছমান হারুওয়ানী! আমি মুঈনুদ্দীনকে কবুল করে নিলাম।” অতঃপর মদিনা শরীফে হুযূর রহমাতুল্লিল আলামিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার রওযা শরীফ যিয়ারত করলেন। এ সময় হযরত উছমান হারুওয়ানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে লক্ষ্য করে বললেন, “হে মুঈনুদ্দীন! তুমি সালাম পেশ করো।” তিনি সালাম দিলেন— “আস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলাইকা ইয়া রসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইকা ওয়াসাল্লাম!” সাথে সাথে রওজা মুবারক হতে জবাব আসলো— “ওয়া আলাইকুমুস সালাম ইয়া কুতুবাল হিন্দ।” অর্থাৎ প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালামের জবাবের সাথে মঈনুদ্দিন চিশতী রহমাতুল্লাহি আলাইহির কার্যক্রমসহ তার বেলায়তের পদমর্যাদা বা উপাধিও দিয়ে দিলেন— “কুতুবুল হিন্দ” বা হিন্দুস্থানের কুতুব বলে। তুমি হিন্দুস্থানে যাও এবং আজমির নামক স্থানে দ্বীনের প্রচার করো। খোদা তোমাকে বরকত দান করবেন”। একথা শুনে পরিপৃপ্ত হলেন মইনুদ্দিন চিশ্তী রহমাতুল্লাহ আলাইহি, পরক্ষনেই চিন্তিত হলেন। বিশাল হিন্দুস্থানের কোন দেশে আছে রাসূল করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার নির্দেশিত আজমীর? চিন্তিত অবস্থায় তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে তিনি দেখলেন, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর শিয়রে উপবিষ্ট। তিনি তাঁকে আজমীর শহরের দৃশ্য দেখিয়ে দিলেন। সেই সঙ্গে দিয়ে দিলেন প্রয়োজনীয় পথ নির্দেশকা।
বাগদাদ অভিমুখে যাত্রা: হযরত খাজা গরিব নাওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বাগদাদ অভিমুখে যাত্রা করেন। পথিমধ্যে অনেক ওলামা—মাশায়েখের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তখন বাগদাদের খলিফা ছিলেন মুস্তানজিদ বিল্লাহ। তথায় হুযূর গাওসুল আজম আবদুল কাদের জিলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাঁর সান্নিধ্যে ৫৭ দিন অতিবাহিত করেন। বিদায়কালে গাউছে পাক রহমাতুল্লাহি আলঅইহি তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলছিলেন, ইরাকের দায়িত্ব শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দীকে আর হিন্দুস্থানের দায়িত্ব আপনাকে দেওয়া হলো।
ভারত উপমহাদেশে আগমন: অতঃপর খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইরান, তাবরিয, ইস্পাহান, বলখ এবং গযনী হয়ে হিন্দুস্তানের লাহোরে আগমন করেন। লাহোরে শায়খ আলী হাযবিরী রহমাতুল্লাহি আলাইহির মাযারে কিছুকাল মুরাকাবায় অতিবাহিত করে দিল্লী চলে আসেন। নির্ভয়ে শুরু করলেন নিয়মিত ইবাদত—বন্দগী। ক্রমে ইসলামের আলো প্রসারিত হতে থাকলো। পিতৃ ধর্ম ত্যাগ করে দলে দলে লোকজন প্রবেশ করতে লাগলো ইসলামের সুবাসিত কাননে। দিল্লীর দ্বীন প্রচার ও নওমুসলিমের বিরাট কাফেলার হেফাযতের দায়িত্ব হযরত বখতিয়ার কাকী রহমাতুল্লাহ আলাইহির উপর ন্যস্ত করে ৫৬১ হিজরির ১০ মুহররম তিনি চল্লিশজন সফর সঙ্গিসহ দিল্লী থেকে আজমীরে পৌঁছেন। সে সময় ভারতবর্ষের আজমির ছিল হিন্দু ধর্ম ও সাম্রাজ্য এবং রাজপুত শক্তির মূল কেন্দ্রস্থল। আজমীরের শাসনকর্তা ছিল পৃথ্বিরাজ বা রায় পথুরা। চারিদিকে পাহাড়, পাথর, মরুভুমি। নিকটেই বৃক্ষছায়া। সফর সঙ্গীগন সবাই যেহেতু পরিশ্রান্ত তাই বিশ্রামের জন্য দরবেশদের কাফেলা এমন একস্থানে উপবেশন করলেন, যা ছিল রাজা পৃথ্বিরাজের উটের বিশ্রামস্থল। রাজার লোকেরা কিছুক্ষন যেতে না যেতেই সবাইকে স্থান ত্যাগ করতে বললো। বিস্মিত হয়ে মইনুদ্দিন চিশ্তী রহমাতুল্লাহ আলাইহি বললেন, “ঠিক আছে আমরা চললাম, তোমাদের উটই এখানে বসে বসে বিশ্রাম করুক।” সে রাতেই মুখে মুখে আগন্তুক দরবেশের আগমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লো সর্বত্র। সকালে মহারাজ পৃথ্বিরাজও শুনতে পেলেন এক অদ্ভুত সংবাদ। উষ্ঠশালার কর্মচারীরা এসে জানালো, গতকাল সন্ধায় যে উটগুলি উষ্ঠশালায় আনা হয়েছিল সবগুলি এখনও শুয়ে আছে। কিছুতেই উঠার নাম করছে না। সঙ্গে সঙ্গে মুসলমান দরবেশ দলের ঘটনাও বর্ণিত হলো রাজার কাছে। দরবেশ দলের নেতা উষ্ঠশালা পরিত্যাগের সময় বলেছিলেন, “তোমাদের উটই এখনে বসে বসে বিশ্রাম করুক।” যা শুনে চিন্তিত হয়ে পড়লেন রাজা পৃথ্বিরাজ। মনে পড়ে গেল তার রাজ মাতার ভবিষ্যতবাণীর কথা। তিনি বলেছিলেন “এক মুসলমান ফকিরের অভিসম্পাতেই পৃথ্বিরাজের রাজ্য ধ্বংস হবে।” একি তবে সেই ফকির? সম্ভবত এই ফকিরের কথাতেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কর্মচারীদেরকে ফকিরদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন রাজা। রাজ আদেশ পালন করল শ্রমিকেরা। হযরত মইনুদ্দিন চিশ্তী রহমাতুল্লাহ আলাইহি বললেন, যাও, এ অবস্থা আর থাকবে না।” তারা উটশালায় ফিরে এসে দেখল উটগুলো স্বাভাবিকভাবে চলাচল শুরু করেছে। দরবেশের কারামতি দেখে সবাই অবাক হয়ে গেল। কৌতুহল নিবারনের জন্য লোকজন যাতায়াত শুরু করে দিল হযরতের আস্তানায়। তাঁর সোহবতের বরকতে তাদের অন্তরের অন্ধকার দুর হতে লাগলো। জেগে উঠলো আজমীরের সত্যান্বেষী জনতা। কিন্তু আতংকিত হলো পুরোহিতরা, শোষক বর্নবাদী হিন্দু সমাজ। ভীত হলো হিংস্র রাজপুরুষগণ। তারা রাজদরবারে গিয়ে হযরত ও তাঁর সহচরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলো। অভিযোগ শুনে রেগে গেলেন রাজা পৃথ্বিরাজ। অহংকারের নীচে চাপা পরে গেল মায়ের সদুপদেশবাণী। রাজা একদল সৈন্যকে আদেশ দিলেন ফকির দরবেশদলকে এখনই রাজ্য থেকে বিতাড়িত করো। সৈন্যরা রাজার আদেশ পেয়ে ঝাপিয়ে পরলো অভিযানে। হযরত খাজা মইনুদ্দিন চিশ্তী রহমাতুল্লাহ আলাইহি নির্বিকার। আল্লাহ তায়ালার সাহায্য কামনা করলেন তিনি। সাথে সাথেই আক্রমনকারীদের কেউ হল অন্ধ, কেউ হলো ভুতলশায়ী। নিরুপায় হয়ে পায়ে পড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলো তারা। দয়ার সাগর গরীব নাওয়ায রহমাতুল্লাহ আলাইহি ক্ষমা করে দিলেন সবাইকে।
রাজা পৃথ্বিরাজ ভাবতে লাগলো কি করবে। ঐশ্বরিক ক্ষমতাধর এই ফকিরের আনুগত্য স্বীকার করবে নাকি তাঁকে বিতাড়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। রাজা ভেবে চিন্তে ঠিক করলো, হিন্দু ধর্মের পরোহিতদের দ্বারা প্রতিরোধ করতে হবে ফকিরকে। তাই সিদ্ধপুরুষ বলে খ্যাত ”রামদেও” কে অনুরোধ করলো তার যোগমন্ত্র বলে এই ফকিরকে বিতাড়িত করতে। রামদেও রাজী হলো। তার দীর্ঘ সাধনালব্ধ শক্তিতে হযরতকে পরাস্ত করার বাসনায় হাজির হলো হযরতের দরবারে। তখন তিনি ছিলেন ধ্যানমগ্ন। কিছুক্ষণ পর চোখ খুললেন হযরত। রামদেও দৃষ্টিপাত করলো খাজা মইনুদ্দিন চিশ্তী রহমাতুল্লাহ আলাইহির জ্যোতির্ময় চেহারার দিকে। মুগ্ধ হয়ে গেলো রামদেও। তার গর্বিত শক্তি মুহুর্তের মধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। কুফরীর অন্ধকারে হিদায়তের আলো জ্বলে উঠলো। হযরতের কদম লুটিয়ে পড়লো রামদেও। স্বীকার করলো ইসলাম। তার নাম রাখা হলো “মোহাম্মদ সাদী”। রামদেও এর ইসলাম গ্রহণের সংবাদ শুনে রাজা ক্ষোভে দুঃখে অস্থির হয়ে উঠলেন।
আনা সগর: পরিশ্রান্ত কাফেলা আবার এগিয়ে চললো সামনের দিকে। অদুরে ‘আনা সাগর’ খ্যাত বিশাল হ্রদ। তার পাড় ঘেষে অজস্র মন্দির। আর এই হ্রদের নিকটে তাঁবু স্থাপন করলেন দরবেশের কাফেলা। একদিন আনা সাগরে অজু করতে গেলেন হযরতের এক খাদেম। পুরোহিতরা অপমান করে তাড়িয়ে দিলো তাঁকে। বর্ণিত ঘটনা শুনে খাজা বাবা মোহাম্মদ সাদীকে ”আনা সাগর” থেকে এক ঘটি পানি আনার নির্দেশ দিলেন। নির্দেশ মত মোহাম্মদ সাদী ‘আনা সাগর’ থেকে এক ঘটি পানি আনতেই দেখা গেলো এক বিস্ময়কর দৃশ্য। এই বিশাদ হ্রদ নয় শুধু সর্বত্র জমে থাকা পানি, এমনকি গৃহপালিত পশুর স্তনের দুধও একেবারে শুকিয়ে গিয়েছে। এই আলৌকিক ঘটনা রাজাকে জানালো প্রজারা। রাজা বাধ্য হয়ে আবারও তার প্রজাদের দুর্ব্যবহারের জন্য ফকিরের কাছে ক্ষমা চাইতে নির্দেশ দিলেন। উপায়ন্তর না দেখে তারা খাজা বাবার কাছে গিয়ে ক্ষমা ভিক্ষা করলেন। মানুষের দুর্দশা দেখে ও পুরোহিতদের ক্ষমা চাওয়ার প্রেক্ষিতে মোহাম্মদ সাদীকে পুনরায় ঘটিতে ভরা পানি আনা সাগরে ঢেলে দিতে নির্দেশ দিলেন। ঘটির পানি ঢেলে দেয়ার সাথে সাথেই ভরে গেল বিশাল হ্রদ ও শুকিয়ে যাওয়া সর্বত্রের পানি ও স্তনের দুধ। এই আলৌকিক ঘটনার পর বহুলোক ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নিল হযরতের হাত ধরে।
এবার প্রতিহত করতে রাজা প্রেরণ করলো দক্ষ অজয় পালকে। রাজকীয় পুরুস্কারের প্ররোচনায় অজয় পাল তার সর্বশক্তি দিয়ে মইনুদ্দিন চিশ্তী রহমাতুল্লাহ আলাইহিকে ঘায়েল করার চেষ্টা করলো। অজয় পালও তার ভুল বুঝতে পেরে তার সঙ্গী সাথীসহ ইসলাম ধর্ম গ্রহন করলো। তিনি অজয় পালের নাম রাখলেন ‘আব্দুল্লাহ বিয়াবানী’।
সংবাদ শুনে মুচড়ে পরলেন রাজা। নিজ রাজ্য রক্ষার কথা চিন্তা করে সংঘর্ষরে পথ অবলম্বন করলেন রাজা। রাজদরবারের একজন কর্মচারী ছিলেন মুসলমান, খাজা মইনুদ্দিন চিশ্তী রাহমাতুল্লাহ আলাইহির একান্ত অনুরক্ত। দরবেশের কাছে বার বার হেনস্ত হবার সমস্ত ক্ষোভ যেন গিয়ে পড়লো ঐ মুসলিম কর্মচারীর উপর। মুসলমান কর্মচারী সমস্ত দুঃখের কথা খাজা বাবার কাছে বর্ননা করে তার জন্য রাজার কাছে একটি সুপারিশ পত্র পাঠাতে অনুরাধ জানালো। অতঃপর তিনি সেই কর্মচারীর পক্ষে একটি সুপারিশ পত্র পাঠালেন। সেই সঙ্গে রাজাকে জানালেন ইসলাম গ্রহণের একান্ত আহ্বান। চিঠি পেয়ে রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেললো পৃথ্বিরাজ। মুসলমান কর্মচারীকে চকুরীচ্যুত করলো রাজা। সেই সঙ্গে খাজা বাবার বিরুদ্ধে উচ্চারন করলেন অশালীন বক্তব্য। সংবাদ শুনে মইনুদ্দিন চিশ্তী রাহমাতুল্লাহ আলাইহির প্রেমময় অন্তরেও প্রজ্জলিত হলো ক্ষোভের আগুন। তিনি এক টুকরা কাগজে লিখে পাঠালেন রাজা পৃথ্বিরাজকে—“মান তোরা যিন্দা বদস্তে লশকরে ইসলাম বছোপর্দম”। অর্থাৎ আমি তোমাকে জীবিতাবস্থাতেই মুসলিম সেনাদের হাতে সোদর্প করলাম।
মুসলিম সেনাদলের ভারত আক্রমণ: ইতিপুর্বে দুই দুইবার হিন্দুস্থান আক্রমন করেও সফল হতে পারেননি সুলতান শাহাবুদ্দিন মোহাম্মদ ঘুরী। তিনি স্বপ্নে দেখলেন শ্বেত শুভ্র বস্ত্রাবৃত এক জ্যোতির্ময় মহাপুরুষ তাঁকে লক্ষ্য করে বললেন, “যাও তোমাকে আমি হিন্দুস্থানের শাসন ক্ষমতা দান করলাম।” এ শুভ স্বপ্ন দেখে সুলতান মনস্থির করলেন হিন্দুস্থান অভিযান শুরু করার। ৫৮৮ হিজরি সালে সুলতান শাহাবুদ্দিন মোহাম্মদ ঘুরী তাঁর বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে হিন্দুস্থান অভিমুখে রওয়ানা হলেন। এই বাহিনীর প্রধান সেনাপতি কুতুবুদ্দিন আইবেক। তারায়েনা প্রান্তরে দুই বাহিনীর মধ্যে প্রচন্ড যুদ্ধ শুরু হলো। মুসলমানদের প্রচন্ড আক্রমনের সামনে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল পৌত্তলিক সৈন্যবাহিনী। দ্রুত গতিতে রাজপুত সৈন্যদের পশ্চাদ্ধাবন করে যুদ্ধের ময়দান থেকে পালিয়ে গেলো, পালিয়ে গেলো সেনাপতি খান্ডেরাও। রাজা পৃথ্বিরাজও সরস্বতী নদীর তীর ধরে পালানোর চেষ্টা করার সময় মুসলমান সৈন্যদের হাতে বন্দী হল। শেষাবধি নিহত হল রাজা। ভয়াবহ এ যুদ্ধে সুলতান সাহাবুদ্দিন ঘোরী নিরংকুশ বিজয় লাভ করলেন। আরো সামনে এগিয়ে চললো ঘোরী বাহিনী। সুলতান দিল্লীর দায়িত্ব দিলেন কুতুবুদ্দিন আইবেককে । তারপর সুলতান শাহাবুদ্দিন মোহাম্মদ ঘুরী এগিয়ে চললেন আজমীরের দিকে। এদিকে আজমীরে ক্রমাগত বেড়েই চলছে খাজা মইনুদ্দিন চিশ্তী রাহমাতুল্লাহ আলাইহির কাফেলা। সুলতান শাহাবুদ্দিন মোহাম্মদ ঘুরী অবশেষে আজমীর এসে পৌঁছলেন। তখন সন্ধ্যা হয় হয়। সূর্যাস্ত হওয়ার পর আশ্চার্যান্বিত হয়ে উঠলেন সুলতান শাহাবুদ্দিন মোহাম্মদ ঘুরী। দূরে কোথায় আজানের ধ্বনি শোনা যায়। সেদিকে এগিয়ে যেতেই তিনি দেখলেন একদল নুরানী লোক হাত বেঁধে দাঁড়িয়েছেন। দরবেশদের জামাতের সঙ্গে নামায আদায় করলেন সুলতান। সালাত শেষে জামাতের ইমামের মুখের দিকে তাকিয়েই চমকে উঠলেন সুলতান শাহাবুদ্দিন মোহাম্মদ ঘুরী। এইতো সেই জ্যোতির্ময় মহাপুরুষ, স্বপ্নে যিনি জানিয়েছেন হিন্দুস্থান বিজয়ের সুসংবাদ।
সুলতান শ্রদ্ধাভরে পরিচিত হলেন হজরতের সাথে। তাঁর হাতে বায়াত গ্রহণ করে তাঁর সোহবতে তিন দিন অতিবাহিত করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে দিল্লীতে রেখে গেলেন কুতুবুদ্দিন আইবেককে। তিনিও বায়াত গ্রহণ করলেন হযরতের প্রতিনিধি খাজা বখতিয়ার কাকী রাহমাতুল্লাহ আলাইহির হাতে। এরপর কুতুবুদ্দিন আইবেক ক্রমে ক্রমে প্রসারিত করলেন মুসলিম রাজ্যের সীমানা।(মাআছিরুল কিরাম,কৃত: গোলাম আলী আজাদ, পৃ.৭)
এ প্রসঙ্গে আবুল হাসান আলী নদভী বলেন, মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক আজমীরকে দাওয়াত, মদীনার ইসলামী মিশন বাস্তবায়নের জন্য মনোনীত করাই ছিল এক আধ্যাত্মিক বিজয়। তাঁর তাকওয়া, লিল্লাহিয়াত, খোদাভীরুতা ও ঐকান্তিক ত্যাগ স্বীকারের ফলে কুফর ও শিরকের রাজত্ব ইসলামী জ্ঞান—বিজ্ঞান ও ওলামায়ে কেরামের আবাসভূমিতে পরিণত হয়।( — তারীখে দাওয়াত ওয়া আজিমত,কৃত: সাইয়্যিদ আবুল হাসান আলী নদবী, খ.—৪)
বিবাহ: গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহির বয়স যখন নব্বই বছর তখন রাসূলুল্লাহর বিশেষ সাক্ষাৎ বা দিদারে মুস্তফা লাভ করলেন। রাসূলে আরবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, “হে মুঈনুদ্দীন! তুমি সত্যিই আমার দ্বীনের সাহায্যকারী। তুমি আমার সব সুন্নাতই পালন করেছেন, তবে একটি সুন্নাত এখনো বাকি রয়ে গেল কেন?” গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এ কথা শুনে খুব চিন্তিত হয়ে পড়লেন, মন ভারি হয়ে গেল। সর্বশেষ তিনি বুঝতে পারলেন, আল্লাহ—রাসূলের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে দ্বীনের খিদমতে ব্যস্ত থাকার কারণে তখনও বিবাহ করার সুযোগ হয়নি তাঁর। এরপর তিনি নব্বই বছর বয়সে পর পর দু’টি বিবাহ করে এ সুন্নাতও আদায় করলেন।
ইবাদত ও রিয়াযত: হযরত খাজা বখতিয়ার কাকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমার পীর ও মুর্শিদ খাজা গরীব নাওয়ায সত্তর বছর পর্যন্ত সর্বদা ওযু অবস্থায় ছিলেন, তিনি যে ব্যক্তির উপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেন, সে গুনাহ থেকে তাওবা করে নিতো এবং কামিল অলী হয়ে যেতো আর যে ব্যক্তি তাঁর খেদমতে তিনদিন থাকতো, সে অন্তরদৃষ্টি ও কারামত সম্পন্ন হয়ে যেতো। তিনি দৈনিক দিবা—রাত্রি একটি করে কুরআনুল করিমের খতম আদায় করতেন। আর প্রতিবার কুরআন মাজীদ খতমের পর অদৃশ্য থেকে একটি আওয়াজ আসতো যে, হে মঈনুদ্দীন! তোমার খতম কবুল করে নেয়া হয়েছে। তিনি কিয়ামুল লায়ল (রাতে নফল আদায়কারী) এবং সর্বদা রোযা পালনকারী ছিলেন। ( — ইকতিবাসিল আনওয়ার, পৃ.৩৫৫)
খেলাফত প্রদান: তিনি কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকীকে খিলাফতের দায়িত্ব অর্পণ করে সিলসিলার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন। গরীব নাওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি যখন এ ক্ষণস্থায়ী জগৎ থেকে বিদায় নেয়ার সময় হলো তখন তাঁর প্রধান খলীফা হযরত কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকী রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে ডেকে বললেন, “হে বখতিয়ার কাকী! আমার সময় শেষ, আমার নিকট আল্লাহ পাকের যা নিয়ামত রয়েছে, তা আমি আপনাকে দিয়ে যাচ্ছি, আপনি তার হক্ব আদায় করবেন। আর আপনি দিল্লী চলে যান, আপনার হিদায়তের বা দ্বীন প্রচারের স্থান হলো দিল্লী।” অন্যদিকে তারই একান্ত ভক্ত—অনুরক্ত খাদেম সুলতান শামসুদ্দীন আলতামাশ দিল্লীর মসনদে সমাসীন হয়ে সাম্রাজ্যের প্রসার, ভিত্তি সুদৃঢ়করণ, ন্যায়ের প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত থাকেন। (ইসলামী বিশ্বকোষ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, খ—১০,পৃ.—৭২৭)
ইন্তেকাল: হযরত মঈনুদ্দীন চিশতী রহমাতুল্লাহ আলাইহি ৬৩৩ হিজরীর ৫ রজব দিবাগত রাত (৬ রজব সুবহে সাদেকের সময়) ইন্তেকাল করেন। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ওফাতের সাথে সাথে তাঁর পবিত্র কপাল মুবারকে স্পষ্টভাবে আরবীতে নুরানী অক্ষরে লিখা হয়ে যায় “হাযা হাবীবুল্লাহ মা—তা ফি হুব্বিল্লাহ” অর্থাৎ ইনি আল্লাহর বন্ধু আল্লাহর মুহব্বতেই তিনি ইন্তিকাল করেছেন। তাঁর বড় শাহজাদা হযরত খাজা ফখরুদ্দীন চিশতী রহমাতুল্লাহ আলাইহি তাঁর নামাযে জানাযার ইমামতি করেন। হযরত বখতিয়ার কাকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, আমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও হুযূরের নির্দেশ পালনার্থে আমি দিল্লী চলে গেলাম। সেখানে গিয়ে বিশ দিন পর আমি সংবাদ পেলাম আমার মহান পীর—মুরশিদ, চিশতিয়া তরিকতের স¤্রাট গরীব নাওয়াজ খাজা মঈনুদ্দীন চিশতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি এ জগৎ থেকে পর্দা করেছেন। এ খবর শুনে আমার মন ভারাক্রান্ত হয়ে গেল, হৃদয় ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল, চোখের জল নিমিষে গড়িয়ে পড়ল। ইতোমধ্যে আসরের সময় আসন্ন। আমি আছর নামায পড়ে জায়নামাযে বসা ছিলাম। এমন সময় আমার তন্দ্রা এসে গেল, আমি দেখতে পেলাম, আমার মহামান্য শায়খ, মুর্শিদ আমার সম্মুখে উপস্থিত। আমি মহামান্য শায়খকে দেখে সালাম দিলাম ও কদমবুছী করলাম। অতঃপর আরজ করলাম, “হে আমার শায়খ! আপনি আল্লাহ তাআলা ও হুযূর পুরনূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার রেযামন্দির জন্য ৯৭ বছর ব্যয় করেছেন। মহান আল্লাহ পাক আপনার সাথে কেমন ব্যবহার করেছেন? জবাবে গরীব নাওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন, “হে আমার প্রিয় বখতিয়ার কাকী! প্রথমত মহান আল্লাহ পাক আমাকে ক্ষমা করেছেন। দ্বিতীয়ত যাঁরা আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার কাছে সবচেয়ে মকবুল, তাঁরা আরশের অধিবাসী হবেন। অর্থাৎ তাঁরা সর্বদা আল্লাহ পাকের দীদারে মশগুল থাকবেন। মহান আল্লাহ পাক দয়া করে আমাকে সেই আরশের অধিবাসী হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অর্থাৎ আমি সর্বদা আল্লাহ তা’আলার দীদারে মশগুল আছি।”
লেখক,আরবি প্রভাষক, তাজুশ শরীয়াহ দরসে নিযামী মাদরাসা,ষোলশহর,চট্টগ্রাম।
কোন মন্তব্য নেই