কুরআন-সুন্নাহর আলোকে শবে বরাতের বৈধতা
মাওলানা মুহাম্মদ রেজাউল করিম
الحمد لله وكفى والصلوة والسلام على سيد الانبياء محمد المصطفى وعلى اله واصحابه اولى الصدق والصفاء-
যে সমস্ত বরকতময় রজনীতে আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের প্রতি করুণার দৃষ্টি দান করে থাকেন, শবে বরাত তারই অন্যতম। রাতটি হলো শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সলফে সালেহীন এবং বিজ্ঞ মনীষীগণ এ রাতটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করেছেন। অনুরূপভাবে যুগে যুগে মুসলমানগণ এরই ধারাবাহিকতায় এ রাতটি পালন করে আসছেন।
আরবী ‘শা’বান’ (شعبان), শব্দটি একবচন, এর বহুবচন হল ‘শা’বানাত (شعبانات), শা’আ-বীন (شعابنين), শা’বানিয়্যী-ন (شعبانين)। এটা باب تفعل - تشعب থেকে গৃহীত। এর অর্থ বিক্ষিপ্ততা ছড়ানো ও শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট হওয়া।
ইমাম রাফে’ (র) হযরত আনাস (রা:)-র উক্তি লিখেছেন, হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে যে, এ মাসের নাম ‘শা’বান’ এ জন্য রাখা হয়েছে যে, এ মাসে রোযা পালনকারীর সাওয়াব, মঙ্গল ও সৌন্দর্য শাখা-প্রশাখার ন্যায় বিস্তার লাভ করে, যাতে রোযাদার জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে।
আরবী ১২ মাসের অষ্টম মাস শাবান। শাবানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত্রটি কোরআনের ভাষায়- ليلة مباركة (লাইলাতুম মুবারাকা) বা বরকতময় রজনী, আর হাদীসের ভাষায়-ليلة النصف من شعبان (লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান) বা শাবানের মধ্য রজনী। তাফসীরের ভাষায় ليلة الصك (লাইলাতুছ্ ছাক) বা সনদপ্রাপ্তির রাত্রি, ليلة النجاة (লাইলাতুন নাজাহ) তথা মুক্তি রজনী। আর আমাদের উপমহাদেশে যাকে শবে বরাত বলে আমরা জানি তা ফারসী ভাষা থেকে উদ্ভূত। শব (شب) বা রাত ও বরাত (برات) বা ভাগ্য, পবিত্রতা, নাজাত, মুক্তির রাত।
পবিত্র কুরআন ও নির্ভরযোগ্য মুফাস্সিরগণের দৃষ্টিতে পবিত্র শবে বরাতঃ
মধ্য শাবানের রাত্রি যা কোরআনের পরিভাষায় লাইলাতুম মুবারাকা নামে পরিচিত। এ রাতটির মর্যাদা, অস্তিত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব কোরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
ইদানিং একটি ভ্রান্ত-মতবাদী দল বিভিন্ন মিডিয়ায় তাদের বক্তব্য, আলোচনায় এবং লেখনীতে সর্বদা এ কথা বলে বেড়াচ্ছে যে, লাইলাতুল বরাত বা শবে বরাতের নির্ভরযোগ্য কোন দলীল কোরআন ও হাদীস শরীফে নেই। যা আছে তাও মাওজু তথা বানোয়াট বা জাল কিংবা সাংঘাতিক পর্যায়ের দুর্বল। অথচ, দেখুন পবিত্র কোরআনে কারীম ও নির্ভরযোগ্য তাফসিরের কিতাবের ভাষ্য-
সূরা দুখানের ১-৪ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
حم-والكتاب المبين- إنا أنزلناه فى ليلة مباركة- إنا كنا منذرين- فيها يفرق كل أمر حكيم-
হা-মীম, এ স্পষ্ট কিতাবের শপথ! নিশ্চয়ই আমি তা বরকতময় রাতে অবতীর্ণ করেছি। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী। এ রাতে বন্টন করে দেওয়া হয় প্রত্যেক হিকমতের কাজ।
এ আয়াতের তাফসীর সম্পর্কে বিশ্ব বরেণ্য নির্ভরযোগ্য মুফাস্সিরগণের মতামতঃ
১. তাফসীরে জালালাইন শরীফে ৪১০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে-
ان انزلناه فى ليلة مباركة هى ليلة القدر او ليلة النصف من شعبان نزل فيها من ام الكتاب من السماء السابعة الى السماء الدنيا انا كنا منذرين-
নিশ্চয়ই আমি তা বরকতময় রাতে অবতীর্ণ করেছি। আর বরকতময় রাত হল লাইলাতুল ক্বদর (ক্বদরের রাত) অথবা লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান (শাবানের মধ্য রাত তথা শবে বরাত)। কেননা এই রাতে উম্মুল কিতাব (কোরআন শরীফ) ৭ম আসমান থেকে দুনিয়ার আসমানে (১ম আসমান) নাযিল হয়েছে। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী।
২. তাফসীরে তাবারী শরীফ পৃষ্ঠা-২২, খন্ড ১০ -এ বর্ণিত আছেঃ
عن محمد بن سوفة, عن عكرمة فى قول الله تبارك وتعالى (فيها يفرق كل أمر حكيم) قال: فى ليلة النصف من شعبان يبرم فيها أمر السنة وتنسخ الأحياء من الأموات ويكتب الحاج فلا يزاد فيهم أحد, ولا ينقص منهم أحد.
كذا أخرج ابن جرير وابن منذر وابن أبى حاتم وكذا فى روح المعانى-
আল্লাহ তায়ালার বাণী فيها يفرق كل أمر حكيم এর তাফসীরে বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত ইকরামা (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, মধ্য শাবানের রাত্রিতে বছরের সকল ব্যাপার চূড়ান্ত করা হয়, জীবিত ও মৃতদের তালিকা লেখা হয় এবং হাজীদের তালিকা তৈরি করা হয়। এ তালিকা থেকে একজনও কমবেশি হয় না।
অনুরূপ বর্ণনা করেছেন ইবনুল মুনজির ও ইবনু আবি হাতেম (রা:)। এরূপ রুহুল মায়ানীতেও আছে।
৩. তাফসীরে কুরতুবী পৃষ্ঠা-১২৬, খন্ড ১৬ এ বর্ণিত আছেঃ
ولها أربعة أسماء: الليلة المباركة, وليلة البراءة, وليلة الصك, وليلة النصف من شعبان-
ইমাম কুরতুবী (রা:) বলেন, এ রাতের ৪ টি নাম আছে-
ক. লাইলাতুম মুবারাকা,
খ.লাইলাতুল বারাআত
গ. লাইলাতুছ্ ছাক, ঘ. লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান।
৪. তাফসীরে বাগভী পৃষ্ঠা-২২৮, খন্ড ৭ -এ বর্ণিত আছেঃ
عن ابن عباس رضى الله عنهما أن الله يقضى الأقضية فى ليلة النصف من شعبان, ويسلمها إلى أربابها فى ليلة القدر-
নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল বিষয়ের চূড়ান্ত ফয়সালা করেন শবে বরাতের রাতে এবং তা সংশ্লিষ্ঠ দায়িত্ববান ফেরেস্তাদের কাছে ন্যস্ত করেন শবে ক্বদরের রাতে।
এ ছাড়াও ১.তাফসীরে ইবনু আবি হাতেম ১২তম খন্ড, ২১৪ পৃষ্ঠা; ২. রুহুল মায়ানী ২৫তম খন্ড, ১১০ পৃষ্ঠা; ৩. বাহরুল মুহীত, ৮ম খন্ড, ২৪ পৃষ্ঠা; ৪. ফাতহুল কাদীর ৪র্থ খন্ড, ৫৭০ পৃষ্ঠা; ৫. যাদুল মাছির ৭ম খন্ড, ১২২ পৃষ্ঠা; ৬. বাগভী, ৭ম খন্ড, ২২৭ পৃষ্ঠা; ৭. নাসাফী ৩য় খন্ড, ৩০২ পৃষ্ঠা; ৮. নিসাপুরী, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৪৯০ পৃষ্ঠা; ৯. কাশ্শাফ ৪র্থ খন্ড, ২৭২ পৃষ্ঠা; ১০. কান্যুল ঈমান; ১১. নুকুত ওয়াল উয়ূন, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৪৯০ পৃষ্ঠা; ১২. দুররে মানসূর ১২তম খন্ড, ৬৯ পৃষ্ঠায় ১৫ টি হাদীস রয়েছে; ১৩. খাজেন, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৪৩ পৃষ্ঠা; ১৪. আল বোরহান, ২৩তম খন্ড, ১১৬ পৃষ্ঠা; ১৫. রাযী, ১৭তম খন্ড, ১৩৩ পৃষ্ঠা; ১৬. আলুসী, ১৮তম খন্ড, ৪২৪ পৃষ্ঠা; ১৭. জালালাইন ৪১০ পৃষ্ঠা; ১৮. হাক্কী, ৫ম খন্ড, ৬ পৃষ্ঠা; ১৯. কুরতুবী, ১৬তম খন্ড, ১২৭ পৃষ্ঠা; ২০. সাভী ২য় খন্ড, ৩০২ পৃষ্ঠা; ২১. ইবনে কাসীর, ৭ম খন্ড, ২৪৬ পৃষ্ঠা; ২২. জামিউল বায়ান ২০তম খন্ড, ১৫১ পৃষ্ঠা; ২৩. নুসূকী ৩য় ও ৪র্থ খন্ড, ১২০ পৃষ্ঠা; ২৪. কাদের ৪র্থ খন্ড, ১৬৬ পৃষ্ঠা; ২৫. মাযহারী ৮ম খন্ড, ৩৬৮ পৃষ্ঠা; ২৬. কাসেমী ৮ম খন্ড, ৩৬৮ পৃষ্ঠা; ২৭. কোশাইরী ৩য় খন্ড, ১৯০ পৃষ্ঠা;২৮. আবু সৌউদ ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৩০ পৃষ্ঠা; ২৯. আয়াতুল আহকাম ৪র্থ খন্ড, ১৬৬ পৃষ্ঠা; ৩০. রুহুল বয়ান ৩য় খন্ড, ৫৯৮ পৃষ্ঠা; ৩১. কাশেফুল আসরার, ৯ম খন্ড, ৯৪-৯৮ পৃষ্ঠা; ৩২. মাওয়ারদী, ৪র্থ খন্ড, ১০২ পৃষ্ঠা; ৩৩. সিরাজুম মুনির, ৩য়, খন্ড, ৪৫৮ পৃষ্ঠা।
এ রকম ২৩১ টি তাফসীর গ্রন্থে লাইলাতুম মোবারাকা বলতে শবে ক্বদরের পাশাপাশি মধ্য শাবানের অর্থাৎ ১৪ শাবানের রাতের কথাও গুরুত্ব সহকারে বলা হয়েছে।
তাফসিরে রুহুল বয়ান ৩য় খন্ড ৫৯৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে- আল্লাহ পাক জাল্লা শানুহু উক্ত রুজি রোজগার ও রিজিক বন্টনের আনুষ্ঠানিক দায়িত্বভার হযরত মিকাঈল (আঃ) এর উপর, কার্যসমূহ ও বন্দেগীর দায়িত্ব ভার ১ম আসমানের ফেরেস্তা হযরত ইসরাইল (আঃ) এর উপর, বিপদাপদ ও দুঃখ দুর্দশায় দূরীকরনের দায়িত্বভার হযরত আযরাইল (আঃ) এর উপর অর্পণ করেন।
শবে বরাত যে মুসলিম উম্মার জন্য একটি বরকতময় ও ফজিলত পূর্ণ রাত্রি এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। সমস্ত মুফাসসিরীন ও মুহাদ্দিসীনে কেরাম এ রাতকে একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন।
গাউসূল আজম বড় পীর শেখ সৈয়্যদ আবূ মুহাম্মদ আবদুল কাদের জিলানী (র:) তদ্বীয় কিতাব “গুনিয়াতুত্ত্বালেবীন” এর ১ম খন্ডে-এ ৬৮৪ পৃষ্টায় উল্লেখ করেন-
قال الله عز وجل حم والكتاب المبين انا انزلناه فى ليلة مباركة قال ابن عباس رضى الله عنهما حم قضى الله ما هو كائن الى يوم القيمة والكتاب المبين يعنى القران- انا انزلناه يعنى القران فى ليلة مباركة هى ليلة النصف من شعبان وهى ليلة البرأة وقال ذالك اكثر المفسرين-
অর্থাৎ:- আল্লাহ পাক এরশাদ করেন- হা-মী-ম প্রকাশ্য মহাগ্রন্থ আল কোরআনের শপথ- যে কোরআনকে আমি মুবারক (বরকতময়) রাতে নাযিল করেছি। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) এর তাফসীর প্রসংগে বলেন- কিয়ামত পর্যন্ত যা হওয়ার আছে- তা আল্লাহ পাক ফয়সালা করে দিয়েছেন। শপথ উজ্জল প্রকাশ্য গ্রন্থ তথা কোরআনের যাকে আমি বরকতময় রাতে অর্থাৎ শাবান মাসের মধ্যবর্তী রজনীতে নাযিল করেছি- ঐ ১৫ শাবানের রাতটি হচ্ছে লাইলাতুল বরাআত- এবং অধিকাংশ মোফাসসিরীনে কেরাম এ মত পোষন করেছেন।
হুজুর গাউছে পাক (র:) তদ্বীয় কিতার “গুনিয়াতুত্ত্বালেবীন” এর ১ম খন্ড-এ ১৮৭ পৃষ্টায় আরো বলেন-
منها سمى ليلة البرأة مباركة لما فيها من نزول الرحمة والبركة والخير والعفو والغفران-
অর্থাৎ ঃ লাইলাতুল বরাতকে এ কারণে “মুবারক” তথা বরকতময় বলা হয়েছে- যেহেতু এ পবিত্র রাতে দুনিয়াবাসীদের জন্য অফুরন্ত রহমত, বরকত ও কল্যাণ নাযিল করা হয়ে থাকে। অধিকন্তু পৃথিবীবাসী মুসলিমদেরকে এ রাতে ক্ষমা করা হয়ে থাকে।
মালেকী মাযহাবের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন আল্লামা শেখ আহমদ ছাভী (র:) সূরা দুখানের তাফসীরে তদ্বীয় তাফসীরে ছাভী-র ৪র্থ খন্ডের ৪০ পৃষ্টায় উল্লেখ করেন-
(قوله ليلة النصف من شعبان) هو قول عكرمة وطائفة ووجه بامور منها ان ليلة النصف من شعبان لها اربعة اسماء اليلة المباركة وليلة البرأة وليلة الرحمة وليلة الصك ومنها فضل العبادة فيها -
অর্থাৎ ঃ ঐ বরকতময় রজনী হচ্ছে অর্ধ শাবানের রাত্রি (মোফাসসিরীনে কেরামের অন্যতম মোফাসসির) বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত ইকরামা (রা:) ও অন্যান্য তাফসীরকারকদের একদলের অভিমত। তারা এর কয়েকটি কারণও উল্লেখ করেছেন। শাবানের চৌদ্দ তারিখের দিবাগত রাত্রির চারটি নামে নামকরণ করেছেন। যেমন- ১। লাইলাতুম মুবারাকাহ- বরকতময় রজনী। ২। লাইলাতুল বারাআত- মুক্তি বা নাজাতের রাত্রি। ৩। লাইলাতুর রহমাহ- রহমতের রাত্রি। ৪। লাইলাতুছ ছাক- সনদপ্রাপ্তির রাত্রি ইত্যাদি।
হাদীসের আলোকে শবে বরাতঃ
🌃 হাদিস নং-০১........
عن ابى موسى الاشعارى عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الله تعالى ليطلع فى ليلة النصف من شعبان فيغفر لجميع خلقه الا لمشرك او مشاحن(رواه ابن ماجه)
হযরত আবূ মূসা আশয়ারী (রা:) রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান- মধ্য শাবানের রাত্রিতে আল্লাহ পাক বিশেষ রহমত নাজিল করেন এবং তার সমস্ত বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু মুশরিক বা শত্রুতা পোষণকারী ব্যক্তিকে ক্ষমা করেন না। (ইবনে মাজাহ শরীফ পৃ. ১০০ হাদীস নং-১৩৮৯, মিশকাত শরীফ-১১৫ পৃষ্ঠা)
এছাড়াও হাদীসটি যেসব গ্রন্থে বর্ণিত আছে-
ইমাম বায়হাকী (র:) “শুয়াবুল ঈমান ৩ য় খন্ড পৃ. ৩৮২, “ফাজায়েলুল আওকাত” এর পৃ.-১৩৩, হাদীস নং-২৯। “মিসবাহুজ জুজাযাহ” এর ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা-৪৪২ হাদীস নং-৪৮৭, “আত তারগীব ওয়াত তারহীব” এর ৩য় খন্ড, হাদীস নং-২৭১৮। আহলে হাদীস তথা লা-মাযহাবীদের নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি নাসির উদ্দীন আলবানীর “সিলসিলাতুল আহাদিছে ছহিহা” এর ৩য়-খন্ড, ১৩১ পৃষ্ঠাসহ আরো ৫ টি হাদীস রয়েছে।
আল্লামা শেখ আবদুল হক মোহাদ্দেস দেহলভী (রা:) এ ধরনের কতিপয় হাদীস শরীফ উল্লেখ পূর্বক তদ্বীয় মা-ছাবাতা বিচ্ছুন্নাহ কিতাবের ৩৫৪ পৃষ্ঠায় মুশাহিন শব্দের ব্যাখ্যায় লিখেন-
المشاحن المذكور فى الحديث صاحب البدعة التارك للجماعة-
হাদীস শরীফে যে “মুশাহিন” শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে- এর অর্থ হলো বেদাতীগণ, যারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত হতে বহিষ্কৃত হয়েছে। এই বেদআত পন্থী ৭২ ফেরকাকে আল্লাহ পাক এ রাত্রিতে মার্জনা করবেন না। অলীকুল সম্রাট গাউসূল আজম বড়পীর শেখ সৈয়্যদ আবূ মুহাম্মদ আবদুল কাদের জিলানী (র:) “গুনিয়াতুত্ত্বালেবীন” নামক কিতাবে শায়েখ আবু নছর সনদ পরস্পরায়, -আমীরুল মোমেনীন মাওলা আলী (রা:) হতে একই ধরনের হাদীস উল্লেখ করে- বর্ণনা করেছেন যার ভাবার্থ প্রায় একই ধরনের।
🌃🌃 হাদীস নং-০২
عن معاذ رضى الله عنه : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: يطلع الله فى ليلة النصف من شعبان الى السماء الدنيا فيغفر لجميع خلقه الا لمشرك او مشاحن
হযরত মুয়াজ বিন জাবাল (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মধ্য শাবানের রাত্রিতে মহান আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে জালওয়া রাখেন, অত:পর তাঁর সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু মুশরিক বা শত্রুতা পোষনকারী ব্যক্তিকে ক্ষমা করেন না। (ইমাম বায়হাকী “শুয়াবুল ঈমান” এর হাদীস নং-৩৮৩৩)
এছাড়াও হাদীসটি যেসব গ্রন্থে বর্ণিত আছে- ইমাম ইবন্ হিব্বান এর সহীহ “ইবন হিব্বান” এর হাদীস নাম্বার ১৯৮০, পৃষ্ঠা-৩৫৫, খন্ড-১৩। আহলে হাদীস তথা লা-মাযহাবীদের নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি নাসির উদ্দিন আলবানীর “সিলসিলাতুল আহাদিস আসসাহীহা”এর ৩য় খন্ড, ১৩৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-১১৪৪। ইমাম তাবারানী তার বিখ্যাত কিতাব “মুজামুল কাবীর” এর ১৫ খন্ড, ২২১ পৃষ্ঠা। “ফাজায়েলুল আওকাত” এর হাদীস নং-২২, পৃষ্ঠা-১১৯। “আত তারগীব ওয়াত তারহীব” এর ২য় খন্ড ২৪১ পৃষ্ঠা। “মাজমাউয যাওয়ায়েদ” এর ৮ম খন্ড ৬৫ পৃষ্ঠা। “আল হিলয়াহ” এর ৫ম খন্ড, পৃ.-১৯১। “আসসুন্নাহ” এর হাদীস নং-৫১২।
উল্লেখ্য যে, বায়হাকী শরীফে বর্ণিত হাদীসটি অন্যান্য ওলামায়ে কেরাম ছাড়াও শবে বরাতের বিরুদ্ধবাদী আলেমও সহীহ হাদীস হিসেবে বর্ননা করেন।৷৷৷৷৷৷৷ ৷৷৷৷৷৷৷৷
🕌🕌 হাদিস নং-০৩
সিহাহ্ সিত্তার অন্যতম হাদীসগ্রন্থ জামে তিরমিজি শরীফ ১ম খন্ড ৯২ পৃষ্ঠায় একটি অধ্যায় রয়েছে باب ما جاء فى ليلة النصف من شعبان সেখানে হযরত উম্মুল মোমেনীন হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা (রাঃ) হতে বর্ণিত: তিনি বলেন- এক রজনীতে আমি দয়াল নবী রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিছানায় পেলাম না। এই জন্য তাঁর সন্ধানে বেরিয়ে পড়লাম। তারপর আমি জান্নাতুল বাকীতে গিয়ে নবীজিকে আকাশের দিকে মাথা উঠানো অবস্থায় দেখতে পেলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, হে আয়েশা! তুমি কি এ ধারণা করছ যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার উপর অবিচার করেছেন? হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বললেন; আমি এমন ধারণা করিনি, ভেবেছিলাম আপনি আপনার অন্য কোন বিবির নিকট গমন করেছেন। তখন নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমালেন নিশ্চয় আল্লাহ পাক শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত্রে প্রথম আকাশে তাজাল্লী ফরমান- অত:পর তিনি (আল্লাহ জাল্লাশানুহু) বনী কালব গোত্রের:মেষের পশম সমূহের চেয়েও বেশী লোকের গুনাহ ক্ষমা করেন।” উল্লেখ্য যে, এই বনী কালব এর মেষের সংখ্যা ছিল ৩০,০০০।
এছাড়াও হাদীসটি যেসব গ্রন্থে বর্ণিত আছে-
“মুসনাদে আহমদ” ১৮তম খন্ড, পৃ.-১১৪, হাদীস নং-২৫৯৬, (২১ টি হাদীস রয়েছে)। “মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা” ১০ম খন্ড, পৃ.-৪৩৮, হাদীস নং-৯৯০৭। “শরহুস্সুন্নাহ” ৪র্থ খন্ড, পৃ.-১২৬, হাদীস নং-৯৯২। “আত তারগীব ওয়াত তারহীব” ৪র্থ খন্ড, পৃ.-২৪০, হাদীস নং-২৪। “আল মুনতাখাব মিনাল মুসনাদ” ১ম খন্ড, ১৯৪ পৃষ্ঠা।
🕌🕌 হাদিস নং-০৪
👉সিহাহ্ সিত্তার অন্যতম হাদীসগ্রন্থ ইবনে মাজাহ শরীফের ১০০ পৃ: এবং মিশকাত শরীফের ১১৫ পৃষ্ঠায় আমীরুল মোমেনীন, শেরে খোদা, মুশকিল কোশা হযরত আলী (ক:) হতে মারফু মুত্তাছিল সনদে বর্ণিত হয়েছে- যে, আল্লাহর হাবীব নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ ফরমান-
اذا كانت ليلة النصف من شعبان- فقوموا ليلها وصوموا يومها فان الله تعالى ينزل فيها لغروب الشمس الى السماء الدنيا- فيقول الا من مستغفرلى فاغفرله الا مسترزق فارزقه الا مبتلى فاعافيه الا كذا كذا حتى يطلع الفجر-
অর্থ; যখন শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত্র আগমন করে তখন তোমরা রাত্র জাগরণ করতঃ মহান আল্লাহ তায়ালার এবাদত বন্দেগী কর এবং এর পরবর্তী দিনে (১৫ তারিখে) রোজা পালন কর। কেননা চৌদ্দ তারিখের সূর্য অস্থ যাওয়া তথা ১৫ তারিখের রাত্র আরম্ভ হওয়ার সাথে সাথে মহান আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার আসমানে স্বীয় তাজাল্লী প্রকাশ ফরমান। অর্থাৎ দুনিয়া বাসীর প্রতি বিশেষ রহমতের দৃষ্টি দান করতঃ দয়াপূর্ণ কুদরতী আওয়াজে আহ্বান করে থাকেন। আমার বান্দাদের মধ্যে কেউ আজকের এ পবিত্র রাত্রে আমি আল্লাহর দরবারে নিজের কৃত পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছ কি? আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। রুজি-রিজিক চাওয়ার আছ কি? আমি তোমাদের চাহিদা অনুপাতে রিজিক দানের ফয়সালা করে দিব। কোন বিপদগ্রস্থ লোক বিপদ মুক্তির জন্য প্রার্থনাকারী আছ কি? আমি তোমাদের বিপদ দূরীভূত করে দিব। এমন আরো বিষয়ে কেউ প্রার্থনাকারী আছ কি? আমি তা সবই তোমাদেরকে দান করব।
মহান আল্লাহ তায়ালার এরূপ করুনাপূর্ণ ঘোষনা সুবহে সাদিক পর্যন্ত চলতে থাকে।
এছাড়াও হাদীসটি যেসব গ্রন্থে বর্ণিত আছে-
“শুয়াবুল ঈমান” ৩য় খন্ড পৃ. -৩৭৯ হাদীস নং-৩৮২২। “মিসবাহুয যুযায” ১ম খন্ড পৃ,-৪৪ হদীস নং-৪৮৬। “মুসনাদে আহমদ” ৬ষ্ঠ খন্ড, ২৩৮ পৃষ্ঠা। 🕌🕌 হাদিস নং-০৫
👉হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, শাবানের মধ্যবর্তী রাত তথা শবে বরাত যখন আগমন করে তখন মহান আল্লাহ তায়ালা রহমতের তাজাল্লী ফরমান এবং তিনি তার সমস্ত বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু মুশরিক বা মুসলমান ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষপোষণকারীকে ক্ষমা করেন না। (বাজ্জার ১ম খন্ড, ৯৩ পৃষ্ঠা ও বায়হাকী ৩য় খন্ড, ৩৭৮ পৃষ্ঠা)
এছাড়াও হাদীসটি যেসব গ্রন্থে বর্ণিত আছে-
“শুয়াবুল ঈমান” ৩য় খন্ড পৃ. -৩৮০, হাদীস নং-৩৮২৭। আহলে হাদীস তথা লা-মাযহাবীদের নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি নাসির উদ্দিন আলবানীর “সহিহ্ আত তারগীব ওয়াত তারহীব” এর ৩য় খন্ড, হাদীস নং-২৭৬৯। “মাজমাউজ জাওয়ায়েদ” এর ৮ম খন্ড, পৃ.-৬৫।৷৷।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।
🌆 এ রাতে কবর যিয়ারত 🌆
এ রাত্রে আপনজন যারা কবরে তাদের কবর যিয়ারত করবেন। স্ব স্ব এলাকার আওলিয়ায়ে কেরাম, বুজুর্গানে দ্বীনদের মাজার যিয়ারত করা অতি উত্তম। এতে ফয়েজ ও বরকত হাসেল হয়। তবে হ্যাঁ কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সারা রাত্র ব্যয় করে দেওয়াটা বোকামী। যেহেতু সুন্নত আদায়ের লক্ষ্যে আয়ত্বের ভিতরে নিকটতম মাজার শরীফ ও কবর জিয়ারত করলে আদায় হয়ে যায়। কেনান, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মা আয়েশা সিদ্দিকা (রা:) শা’বানের ১৫ তারিখের রাতে জান্নাতুল বাকীতে মোনাজাতরত অবস্থায় পেয়েছেন। (“জামে তিরমিজি” ১ম খন্ড ৯২ পৃষ্ঠা, “মুসনাদে আহমদ” ১৮তম খন্ড, পৃ.-১১৪, হাদীস নং-২৫৯৬। “মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা” ১০ম খন্ড, পৃ.-৪৩৮, হাদীস নং-৯৯০৭। “শরহুস্সুন্নাহ” ৪র্থ খন্ড, পৃ.-১২৬, হাদীস নং-৯৯২। “আত তারগীব ওয়াত তারহীব” ৪র্থ খন্ড, পৃ.-২৪০, হাদীস নং-২৪। “আল মুনতাখাব মিনাল মুসনাদ” ১ম খন্ড, ১৯৪ পৃষ্ঠা।)।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।
🌆 শবে বরাত রাতে আমাদের করণীয়🌆
👉ফরজ নামাজ সমূহ জামায়াত সহকারে আদায় করা।
👉কোরআন শরীফ তিলাওয়াত করা।
👉প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর বেশী বেশী দরুদ শরীফ পড়া।
👉বেশী বেশী নফল নামাজ আদায় করা।
👉সালাতুত তাসবীহ ও তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা।
👉মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন ও আওলিয়ায়ে কেরামসহ নিকটবর্তী কবর জিয়ারত করা।
👉তাওবা করা, জিকির ও তাসবীহ-তাহলীল পড়া।
👉শবে বরাতের আগের দিন ও পরের দিনে ২টি নফল রোজা রাখা
👉পবিত্র মিলাদ শরীফ ও তাজিমসহকারে ক্বিয়ামের মজলিস কায়েম করা সর্বোপরি -মুসলিম মিল্লাত, দেশ, আত্মীয়-স্বজন, মা-বাবা ও নিজেদের জন্য দোয়া করা।
🚥পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, তাফসীর, হাদীস ও ফিকহের অসংখ্য গ্রন্থে শবে বরাতের এত ফযিলত থাকার পরও যারা এর অস্তিত্বকে স্বীকার করবে না, এ রকম লোকদের ব্যাপারেই মহান আল্লাহ পাক সূরায়ে আরাফের ১৭৯ নাম্বার আয়াতে ইরশাদ করেন-
ولقد ذرأنا لجهنم كثيرا من الجن والانس- لهم قلوب لا يفقهون بها, ولهم اعين لا يبصرون بها, ولهم اذان لا يسمعون بها, اولئك كا لانعام بل هم اضل, اولئك هم الغافلون-
অর্থাৎ : নিশ্চয়ই আমি জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি বহু জিন ও মানবকে, তারা এমন সব হৃদয় ধারণ করে, যে গুলোর মধ্যে বোধ-শক্তি নেই, তাদের এমন সব চক্ষু রয়েছে, যে গুলো দ্বারা তারা দেখে না এবং তাদের এমন সব কান রয়েছে, যে গুলো দ্বারা তারা শুনে না, তারা চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায় বরং তা হতেও অধম, তারাই আলস্যের মধ্যে পড়ে রয়েছে।
⛲আবার অনেকে আছে শবে বরাতের রাতে ইশার নামাজ আদায়ের পর মসজিদে তালা ঝুলিয়ে রাখে যাতে কেউ নামাজ পড়তে না পারে। এদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ সুরা বাকারার ১১৪ নাম্বার আয়াতে ইরশাদ করেন-
ومن اظلم ممن منع مساجد الله ان يذكر فيها اسمه وسعى فى خرابها- اولئك ما كان لهم ان يدخلوها الا خائفين- لهم فى الدنيا خزئ ولهم فى الاخرة عذاب عظيم-
অর্থ,এবং তার চেয়ে অধিকতর যালিম কে, যে আল্লাহর মসজিদগুলোতে বাধা দেয় সেগুলোতে আল্লাহর নামের চর্চা হওয়া থেকে, আর সেগুলোর ধ্বংস সাধনে প্রয়াসী হয়? তাদের জন্য ভয়-বিহ্বল না হয়ে মসজিদে প্রবেশ করা সঙ্গত ছিলো না, তাদের জন্য রয়েছে পৃথিবীতে লাঞ্ছনা, রয়েছে পরকালে মহাশাস্তি।
🏟তাই আসুন, সকল বিতর্ক ভুলে গিয়ে ফযিলতের এই রাতে আমরা সকলেই ইবাদতের মধ্যে অতিবাহিত করি, আল্লাহর দরবারে কৃত গুনাহের ক্ষমা প্রার্থনা করি, নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্ঠি অর্জন করি।বিশেষ করে COVID 19.করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি কামনা করি।
আল্লাহ পাক আমাদরকে সহীহ বুঝ ও সে অনুযায়ী আমল করার তাওফীক দান করুন, আমীন!বিহুরমাতে সায়্যিদিল মুরসালিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ পটকা ফুটানো, আতশ বাজি, বোমাবাজি, গোলাবারুদ ইত্যাদি ফাটান ও পোড়ান এই সমস্ত কাজ ইসলামী শরীয়তে সম্পূর্ণ হারাম, এর থেকে মুসলিম উম্মাহ সবাইকে বিরত থাকতে হবে, যারা করে তাদেরকে বুঝাতে হবে, কেউ না মানলে তাকে প্রতিহত করতে হবে।
লিখকঃ 🎓লেকচারার, রাণীরহাট আল-আমিন হামেদিয়া ফাযিল (ডিগ্রি) মাদরাসা
কোন মন্তব্য নেই