উদীয়মান অর্থনীতির শক্তিধর রাষ্ট্র মালয়েশিয়া
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত নতুন শিল্পোন্নত দেশ মালয়েশিয়া। নানান বর্ণ, ধর্ম আর সংস্কৃতির মানুষের দেশটির রাজধানী হচ্ছে কুয়ালামপুর। আর প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়া। প্রায় ৪০ মাইল বিস্তৃত চীন সমুদ্র দেশটিকে দুই খণ্ডে আলাদা করে রেখেছে। ৩ লাখ ২৯ হাজার ৮৪৭ বর্গকিলোমিটারের দেশিিটর জনসংখ্যা ২ কোটি ৮৯ লক্ষ। এদের সাক্ষরতার হার ৯২% এবং মাথাপিছু আয় ৩৮৮.৩১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তারা মালয় ভাষায় কথা বলে।
অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগ এবং উনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশরা এ অঞ্চলে উপনিবেশ এবং আশ্রিত রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। একে ব্রিটিশ মালয় বলা হত। ১৯৪২ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত ধীরে ধীরে জাপান দখল করতে থাকে। ১৯৪৮ সালে মালয় উপদ্বীপে অবস্থিত ব্রিটিশশাসিত অঞ্চল সমূহের সমন্বয়ে মালয় ফেডারেশন গঠিত হয়। যা ১৯৫৭ সালে টেংকু আবদুর রহমানের নেতৃত্বে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে । তাই তাঁকে মালেশিয়া স্বাধীনতার জনক বলা হয়।
নীল আকাশে উড়তে থাকে সাদা ও লাল ১৩ টি সমান্তরাল ভাগে বিভক্ত চতুর্ভূজ আকৃতি অংশে ১৪ টি জ্যোতিবিশিষ্ট একটি হলুদ তারা ও হলুদ অর্ধচন্দ্র খচিত পতাকা। ব্র্রিটেনের হাত থেকে মুক্তির পর চালু হয় রাজতন্ত্র। তখন থেকে মালয়েশিয়ায় নয়টি উত্তরাধিকার ধারায় রাজ্যের শাসকরা পালাক্রমে ৫ বছরের জন্য রাজা হয়ে আসছেন। প্রদেশের সুলতানরা গোপন ব্যালেটের মাধ্যমে রাজা নির্র্বাচিত করেন।
দেশটির প্রথম রাজা টেংকু আবদুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৩১ আগষ্ট থেকে ১৯৬০ সালের ১ এপ্রিল পর্যন্ত ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। আর বর্তমান রাজা সুলতান মিজান জয়নুল আবেদীন সেদেশের ১৫ তম রাজা। দেশটির রাজা বা রাষ্ট্রপ্রধানকে ইয়াং দ্য পেরতুয়ান আগাং বলা হয় (অর্থাৎ সর্বোচ্চ শাসক)। মালেশীয় সরকারপদ্ধতি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন পদ্ধতির আদলে গঠিত। রাজার ভূমিকা নিছক আনুষ্ঠানিক। কেননা প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী ও পার্লামেন্টের উপর ন্যস্ত। পার্লামেন্টে অনুমোদনের পর প্রধানমন্ত্রীকে রাজাই নিয়োগ দেন।
ব্রিটিশ নিপীড়ন থেকে মুক্ত মালেশিয়া ছিল দারিদ্রপীড়িত দেশ। সেই সাথে যুক্ত হয়েছিল নিরক্ষরতা আর পশ্চাদমুখিনতা। টেংকু আবদুর রহমান বহুধাবিভক্ত দেশটিতে রোপন করেন ঐক্যের বীজ। বিশ্লেষকদের ভাষ্য মতে, মোট জনসংখ্যার ৬০ ভাগ মালয়ি মুসলমান, ২৪ ভাগ চৈনিক, ৭ভাগ ভারতীয়, ৯ ভাগ বিভিন্ন উপজাতীয়। হাজারো প্রকরণে বিভক্ত দেশটিতে জাতীয় ঐক্যের ক্ষেত্র ছিল সঙ্কুচিত । সেই সঙ্কুচিত ক্ষেত্রকে প্রসারিত করে স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে চার বা পাঁচ দশকে সে দেশের জাতীয় নেতৃত্ব জাতীয় জীবনের সব স্রোতধারা সম্মিলিত করে অনগ্রসরতার পাতাল থেকে উন্নতির শিখরে পৌছে দিয়েছেন।
আধুনিক মালয়েশিয়ার চোখধাঁধানো উন্নতি আর মজবুত অর্থনৈতিক ভিত গড়ায় যার অবদান অবিস্মরণীয় তিনি হলেন র্র্দীঘমেয়াদি (১৯৮১-২০০৩) চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনন্দিত রাষ্ট্রনায়ক ডা. মাহথির মুহাম্মদ। তিনি তার দূরদর্শিতা ও বিচক্ষণতার মাধ্যমে হাতে নেন ওয়ান মালেশিয়া কনসেপ্ট। এই কনসেপ্টের মূল ভাষ্য হচ্ছে- মালেশিয়য়ার নাগরিক দল- মত, ধর্ম-বর্ণ র্নির্র্বিশেষে সবাই দেশের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে, যা তাদের ভাষায় ছাতু মালেশিয়া। যেমন কথা তেমন কাজ। হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম, খ্রীষ্টান সবাই দেশের তরে কাজ করেছে সমানতালে। দাঁড়িয়েছে বিশ্ব দরবারে মাথা উচু করে, উন্নত করেছে স্বীয় দেশকে। মালয়েশিয়াকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করারজন্য পুরোদপ্তর তৈরি করে ভিশন ২০২০ এর দ্বারপ্রান্তে দেশকে রেখে এই মহান নেতা স্বেচ্ছায় অবসর নিলেন। তাঁর এ মহান ত্যাগ ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে রক্ষিত হবেই।
মালয়েশিয়া ভ্রমণকারীদের ভাষ্যমতে, পুরো দেশ জুড়ে দেখা যায় পাহাড় আর জঙ্গল। সরকারি নজরদারিতে মালয়েশিয়াতে পর্যটকদের সব ধরনের সুব্যবস্থা রাখা হযেছে। রাস্তা – ঘাটে কোন ট্রাফিক পুলিশ দেখা যায় না। দেশটির রাস্তা থেকে শুরু করে প্রতিটি স্থাপনা যেন পর্যটক আকর্ষণের জন্যই তৈরি করা। গাড়ি চলা চলে নেই কোন শব্দ, সড়কগুেেলা খুবই প্রশস্ত। উড়াল ট্রেন, মনোরেল, ম্যাগনেটিক রেল, পাতাল সড়ক আর শত শত ফ্লাইওভার মানুষের চলাচলকে করেছে অত্যন্ত সাবলীল।
মালয়েশিয়ায় দর্শনীয় স্থাপনার অভাব নেই বললে চলে॥ নানা রকম স্থাপনাগুলো অতিযত্নে সংরক্ষণ করা হয়েছে। মালয়েশিয়ায় এসে টুইন টাওয়ার, মারদেকা স্কয়ার, সুলতান আবদুস সালাম বিল্ডিং, মার্কেট স্কয়ার, কে এল রেলওয়ে স্টেশন, লিটল ইন্ডিয়া প্রভৃতি স্থাপনাগুলোতে ঢুঁ মারেন না এমন পর্যটক খুঁজে মেলা ভার।
মালয়েশিয়ায় রয়েছে ধর্মীয় স্বাধীনতা। অসামপ্রদায়িক সংবিধানে পরিচালিত হওয়া সত্ত্বেও ইসলাম ধর্ম নিয়ে কারো গা- জ্বালা নেই। শতকরা ৬০.৪ মুসলিম জনগণ বসবাস করছে উন্নত মর্যাদায়। ঘর-বাড়ি, সরকারি অফিস- আদালত সব কিছুতেই রয়েছে ইসলামী স্থাপত্যের ছাপ। সে দেশের সরকারই প্রমান করেছে ইসলামকে সমুন্নত রেখেই অসামপ্রদায়িকতার লালন করা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিরাজ করছে সম্পূর্ণ একাডেমিক পরিবেশ। ক্লাস- পরীক্ষা, সেমিনার- সিম্পোজিয়াম, ডিবেট, খেলাধুলার মধ্যদিয়ে আনন্দময় ক্যাম্পাস শির্ক্ষাথীদের প্রাণবন্ত করে। নেই হলদখল, মারামারি, চাঁদাবাজি ও দলীয় লেজুড়বৃত্তি। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে সওদাগরবিহীন ওপেন দোকান। কলা ,রুটি, বিস্কুট, পানি প্রভৃতির গায়ে মূল্য আছে , ক্রেতা পণ্যের নির্ধারিত মূল্য ওপেন বক্সে ফেলে পণ্য নেয়। কেউ ফাঁকি দেয় না। আমানতদারি বা বিশ্বস্ততার এই দৃষ্টান্ত সত্যিই বিরল ।
মালেশিয়ার মুসলমান প্যান্ট- শার্ট- টাই পরা হলেও প্রত্যেকেই পারে সুন্দর কোরআন তেলাওয়াত করতে, আরবিতে কম- বেশি কথা বলতে পারে। তাদের রয়েছে ইসলাম সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা ।
সেদেশের সোশ্যাল সিকিউরিটি খুবই মজবুত। ওখানে নেই খুন – হত্যা, অপহরণ, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও ইভটিজিং। গভীর রাতেও একজন নারী যুবতী নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে। সেখানে ধনী-গরীব, বড়- ছোট ভেদাভেদ নেই। আইনের চোখে সবাই সমান। মৌলিক অধিকার ও বিচার পেতে কারও বেগ পেতে হয় না। জনগণও সরকারের ওপর খুবই আস্থাবান।
অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগ এবং উনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশরা এ অঞ্চলে উপনিবেশ এবং আশ্রিত রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। একে ব্রিটিশ মালয় বলা হত। ১৯৪২ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত ধীরে ধীরে জাপান দখল করতে থাকে। ১৯৪৮ সালে মালয় উপদ্বীপে অবস্থিত ব্রিটিশশাসিত অঞ্চল সমূহের সমন্বয়ে মালয় ফেডারেশন গঠিত হয়। যা ১৯৫৭ সালে টেংকু আবদুর রহমানের নেতৃত্বে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে । তাই তাঁকে মালেশিয়া স্বাধীনতার জনক বলা হয়।
নীল আকাশে উড়তে থাকে সাদা ও লাল ১৩ টি সমান্তরাল ভাগে বিভক্ত চতুর্ভূজ আকৃতি অংশে ১৪ টি জ্যোতিবিশিষ্ট একটি হলুদ তারা ও হলুদ অর্ধচন্দ্র খচিত পতাকা। ব্র্রিটেনের হাত থেকে মুক্তির পর চালু হয় রাজতন্ত্র। তখন থেকে মালয়েশিয়ায় নয়টি উত্তরাধিকার ধারায় রাজ্যের শাসকরা পালাক্রমে ৫ বছরের জন্য রাজা হয়ে আসছেন। প্রদেশের সুলতানরা গোপন ব্যালেটের মাধ্যমে রাজা নির্র্বাচিত করেন।
দেশটির প্রথম রাজা টেংকু আবদুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৩১ আগষ্ট থেকে ১৯৬০ সালের ১ এপ্রিল পর্যন্ত ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। আর বর্তমান রাজা সুলতান মিজান জয়নুল আবেদীন সেদেশের ১৫ তম রাজা। দেশটির রাজা বা রাষ্ট্রপ্রধানকে ইয়াং দ্য পেরতুয়ান আগাং বলা হয় (অর্থাৎ সর্বোচ্চ শাসক)। মালেশীয় সরকারপদ্ধতি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন পদ্ধতির আদলে গঠিত। রাজার ভূমিকা নিছক আনুষ্ঠানিক। কেননা প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী ও পার্লামেন্টের উপর ন্যস্ত। পার্লামেন্টে অনুমোদনের পর প্রধানমন্ত্রীকে রাজাই নিয়োগ দেন।
ব্রিটিশ নিপীড়ন থেকে মুক্ত মালেশিয়া ছিল দারিদ্রপীড়িত দেশ। সেই সাথে যুক্ত হয়েছিল নিরক্ষরতা আর পশ্চাদমুখিনতা। টেংকু আবদুর রহমান বহুধাবিভক্ত দেশটিতে রোপন করেন ঐক্যের বীজ। বিশ্লেষকদের ভাষ্য মতে, মোট জনসংখ্যার ৬০ ভাগ মালয়ি মুসলমান, ২৪ ভাগ চৈনিক, ৭ভাগ ভারতীয়, ৯ ভাগ বিভিন্ন উপজাতীয়। হাজারো প্রকরণে বিভক্ত দেশটিতে জাতীয় ঐক্যের ক্ষেত্র ছিল সঙ্কুচিত । সেই সঙ্কুচিত ক্ষেত্রকে প্রসারিত করে স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে চার বা পাঁচ দশকে সে দেশের জাতীয় নেতৃত্ব জাতীয় জীবনের সব স্রোতধারা সম্মিলিত করে অনগ্রসরতার পাতাল থেকে উন্নতির শিখরে পৌছে দিয়েছেন।
আধুনিক মালয়েশিয়ার চোখধাঁধানো উন্নতি আর মজবুত অর্থনৈতিক ভিত গড়ায় যার অবদান অবিস্মরণীয় তিনি হলেন র্র্দীঘমেয়াদি (১৯৮১-২০০৩) চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনন্দিত রাষ্ট্রনায়ক ডা. মাহথির মুহাম্মদ। তিনি তার দূরদর্শিতা ও বিচক্ষণতার মাধ্যমে হাতে নেন ওয়ান মালেশিয়া কনসেপ্ট। এই কনসেপ্টের মূল ভাষ্য হচ্ছে- মালেশিয়য়ার নাগরিক দল- মত, ধর্ম-বর্ণ র্নির্র্বিশেষে সবাই দেশের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে, যা তাদের ভাষায় ছাতু মালেশিয়া। যেমন কথা তেমন কাজ। হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম, খ্রীষ্টান সবাই দেশের তরে কাজ করেছে সমানতালে। দাঁড়িয়েছে বিশ্ব দরবারে মাথা উচু করে, উন্নত করেছে স্বীয় দেশকে। মালয়েশিয়াকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করারজন্য পুরোদপ্তর তৈরি করে ভিশন ২০২০ এর দ্বারপ্রান্তে দেশকে রেখে এই মহান নেতা স্বেচ্ছায় অবসর নিলেন। তাঁর এ মহান ত্যাগ ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে রক্ষিত হবেই।
মালয়েশিয়া ভ্রমণকারীদের ভাষ্যমতে, পুরো দেশ জুড়ে দেখা যায় পাহাড় আর জঙ্গল। সরকারি নজরদারিতে মালয়েশিয়াতে পর্যটকদের সব ধরনের সুব্যবস্থা রাখা হযেছে। রাস্তা – ঘাটে কোন ট্রাফিক পুলিশ দেখা যায় না। দেশটির রাস্তা থেকে শুরু করে প্রতিটি স্থাপনা যেন পর্যটক আকর্ষণের জন্যই তৈরি করা। গাড়ি চলা চলে নেই কোন শব্দ, সড়কগুেেলা খুবই প্রশস্ত। উড়াল ট্রেন, মনোরেল, ম্যাগনেটিক রেল, পাতাল সড়ক আর শত শত ফ্লাইওভার মানুষের চলাচলকে করেছে অত্যন্ত সাবলীল।
মালয়েশিয়ায় দর্শনীয় স্থাপনার অভাব নেই বললে চলে॥ নানা রকম স্থাপনাগুলো অতিযত্নে সংরক্ষণ করা হয়েছে। মালয়েশিয়ায় এসে টুইন টাওয়ার, মারদেকা স্কয়ার, সুলতান আবদুস সালাম বিল্ডিং, মার্কেট স্কয়ার, কে এল রেলওয়ে স্টেশন, লিটল ইন্ডিয়া প্রভৃতি স্থাপনাগুলোতে ঢুঁ মারেন না এমন পর্যটক খুঁজে মেলা ভার।
মালয়েশিয়ায় রয়েছে ধর্মীয় স্বাধীনতা। অসামপ্রদায়িক সংবিধানে পরিচালিত হওয়া সত্ত্বেও ইসলাম ধর্ম নিয়ে কারো গা- জ্বালা নেই। শতকরা ৬০.৪ মুসলিম জনগণ বসবাস করছে উন্নত মর্যাদায়। ঘর-বাড়ি, সরকারি অফিস- আদালত সব কিছুতেই রয়েছে ইসলামী স্থাপত্যের ছাপ। সে দেশের সরকারই প্রমান করেছে ইসলামকে সমুন্নত রেখেই অসামপ্রদায়িকতার লালন করা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিরাজ করছে সম্পূর্ণ একাডেমিক পরিবেশ। ক্লাস- পরীক্ষা, সেমিনার- সিম্পোজিয়াম, ডিবেট, খেলাধুলার মধ্যদিয়ে আনন্দময় ক্যাম্পাস শির্ক্ষাথীদের প্রাণবন্ত করে। নেই হলদখল, মারামারি, চাঁদাবাজি ও দলীয় লেজুড়বৃত্তি। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে সওদাগরবিহীন ওপেন দোকান। কলা ,রুটি, বিস্কুট, পানি প্রভৃতির গায়ে মূল্য আছে , ক্রেতা পণ্যের নির্ধারিত মূল্য ওপেন বক্সে ফেলে পণ্য নেয়। কেউ ফাঁকি দেয় না। আমানতদারি বা বিশ্বস্ততার এই দৃষ্টান্ত সত্যিই বিরল ।
মালেশিয়ার মুসলমান প্যান্ট- শার্ট- টাই পরা হলেও প্রত্যেকেই পারে সুন্দর কোরআন তেলাওয়াত করতে, আরবিতে কম- বেশি কথা বলতে পারে। তাদের রয়েছে ইসলাম সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা ।
সেদেশের সোশ্যাল সিকিউরিটি খুবই মজবুত। ওখানে নেই খুন – হত্যা, অপহরণ, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও ইভটিজিং। গভীর রাতেও একজন নারী যুবতী নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে। সেখানে ধনী-গরীব, বড়- ছোট ভেদাভেদ নেই। আইনের চোখে সবাই সমান। মৌলিক অধিকার ও বিচার পেতে কারও বেগ পেতে হয় না। জনগণও সরকারের ওপর খুবই আস্থাবান।
সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের মূল্য সর্বদা জনগণের নিয়ন্ত্রণাধীন। চাষীদের ব্যাপক ভর্তুকি দিয়ে সরকার দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায় রাখতে সর্বদা সচেষ্ট। কোন ব্যবসায়ী ইচ্ছামাফিক কোন মূল্য বাড়াতে পারে না। বাড়াতে হলে সর্বপ্রথম মূল্যবৃদ্ধির কারণ দর্শিয়ে সরকারের নিকট আবেদন করতে হবে। অত:পর সরকার তা পর্যবেক্ষণ করে যদি মূল্যবৃদ্ধি প্রয়োজন মনে করে তবেই সম্ভব, নচেৎ মূল্য বাড়ানো সম্ভব নয়।
আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও জাতীয় নেতাদের উচিত, তাদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা। ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখা একান্ত প্রয়োজন।
লেখক : প্রাবন্ধিক
কোন মন্তব্য নেই