বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ





ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনের শান্তিপ্রিয় সাধারণ মুসলিম জনগণের উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার নগর জুড়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নগরীর বিভিন্নস্থানে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে হামলা বন্ধ করার আহবান জানান তাঁরা বলেন, অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল এরই মধ্যে প্রায় দুশত সাধারণ জনগণকে হত্যা করেছে ইসরাইলের যুদ্ধ বিমান ট্যাংকের গোলার আঘাতে আহত হয়েছে হাজার হাজার নারী পুরুষ নিষ্পাপ শিশু কিশোর ভেঙে দিয়েছে পবিত্র মসজিদ সহ অসংখ্য স্থাপনা ভিটেবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার নারী পুরুষ অজানার উদ্দেশ্যে

ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ওপর ইসরাইলি বর্বরতা গণহত্যার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে সোচ্চার হওয়ার ডাক এবং মুসলমানদের নিরাপত্তা দানে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ জাতিসংঘের বিপরীতে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে আলাদা মুসলিম জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত। গতকাল শুক্রবার বাদে জুমা নগরীর লালদীঘি চত্বরে অনুষ্ঠিত গণজমায়েত প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআতের প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা এমএ মতিন। সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গণজমায়েতে আহলে সুন্নাত নেতৃবৃন্দ বলেন, সন্ত্রাসবাদের জনক ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল ফিলিস্তিনি মুসলমানদের নিজেদের ভিটেমাটি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে শুধু ক্ষান্ত হয় নি, প্রতিনিয়ত নির্বিচারে খুন করছে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের। ইসরাইলি বর্বরতা থেকে নারী-শিশু-মসজিদ-মাজার পর্যন্ত রক্ষা পাচ্ছে না। বক্তারা বলেন, বিশ্ব মোড়ল আমেরিকাসহ শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর প্রত্যক্ষ প্রশ্রয়ে ইন্ধনে ইসরাইল দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নির্মমতা বর্বরতা মধ্যযুগের বর্বরতাকেও ছাড়িয়ে গেছে। আহলে সুন্নাত নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে ফিলিস্তিন ইস্যুতে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের দাবি জানান এবং সরকারের পক্ষ থেকে জোরালো প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানান। তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপসহ সকল দেশকে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে ইসরাইলের নির্মমতার বিরুদ্ধে এক কাতারে আসার আহ্বান জানান। ফিলিস্তিন, ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, মিসর, আফগানিস্তানসহ দেশে দেশে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চললেও জাতিসংঘ, আরবলীগ ওআইসি, আরবদেশসহ বিশ্ব সংস্থাগুলোর রহস্যজনক নীরবতায় আহলে সুন্নাত নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মুসলমানদের দমনে-নিপীড়নে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো আজ একই কাতারে শামিল। এই দুঃসহ পরিস্থিতির অবসানে শান্তিকামী মানুষ মুসলমানদের আজ জেগে উঠতে হবে। বক্তারা ইহুদি পণ্য বর্জনের ডাক দেন এবং ফিলিস্তিনি ইস্যুতে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষায় মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানান। গণজমায়েত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আল্লামা এমএ মান্নান, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ চেয়ারম্যান আলহাজ পেয়ার মোহাম্মদ, আল্লামা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান, শায়খুল হাদিস আল্লামা কাজী মুঈনুদ্দিন আশরাফী, মাওলানা ... আবদুস সামাদ, আল্লামা নূর মোহাম্মদ আলকাদেরী, অধ্যক্ষ আল্লামা তৈয়ব আলী, মাওলানা নূরুল ইসলাম জেহাদী, উপাধ্যক্ষ আল্লামা জুলফিকার আলী চৌধুরী, অধ্যক্ষ আল্লামা বদিউল আলম রিজভী, অধ্যক্ষ আল্লামা ইসমাইল নোমানী, মাওলানা ইকবাল হোসাইন আলকাদেরী, রাশেদুল হাসান মুরাদ। আহলে সুন্নাত এর নানা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা রেজাউল করিম তালুকদার, মোহাম্মদ জাকের হোসাইন, মাওলানা গিয়াস উদ্দিন নেজামী, খোরশিদ আলম খান, মাওলানা নুরুচ্ছফা আলকাদেরী, মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, হাবিবুল মোস্তফা সিদ্দিকী, মুহাম্মদ শফিউল আলম, মুহাম্মদ নুরুল্লাহ রায়হান খান, মুহাম্মদ আবদুর রসূল প্রমুখ। গণজমায়েতে আল্লামা এম মান্নান বলেন, নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরতা চালাতে ইসরাইল পবিত্র রমজান মাসকে বেছে নিয়েছে। তাদের ঔদ্ধত্য সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এই সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আজ আমাদের সোচ্চার হতে হবে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআতের সমন্বয়ক মাওলানা এম. . মতিন বলেন, দেশে দেশে মুসলমানদের ওপর নিপীড়ন চললেও জাতিসংঘ আজ নীরব। লোক দেখানো প্রতিবাদ ছাড়া জাতিসংঘ মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষায় কিছুই করতে পারছেনা। অথর্ব এই জাতিসংঘ থেকে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে বেরিয়ে এসে মুসলিম জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়াই আজ সময়ের দাবি। আল্লামা মুফতি সৈয়দ অছিয়র রহমান বলেন, ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো আজ মুসলমানদের ইমানি দাবি হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনি মুসলমানসহ নিপীড়িত মুসলমানদের দুঃখ-দুর্দশা থামাতে আজ সর্বশক্তি নিয়ে আমাদেরকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। আল্লামা কাজী মুঈনুদ্দিন আশরাফী বলেন, মুসলমানদের ওপর দমন-নিপীড়ন চোখ বুজে মেনে নেওয়া যাবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুসলমানদের জানমাল রক্ষায় সোচ্চার হতে হবে। মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর অনৈক্যই মুসলমানদের দুর্দশার বড় কারণ বলে তিনি উল্লেখ করেন